মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫

রানি এলিজাবেথের শেষকৃত্যে সৌদি যুবরাজকে আমন্ত্রণের সমালোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০৬:২২ এএম

রানি এলিজাবেথের শেষকৃত্যে সৌদি যুবরাজকে আমন্ত্রণের সমালোচনা

ব্রিটেনের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের আমন্ত্রণ পেয়েছেন সৌদি আরবের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। বিশ্বের আরও অনেক নেতাকেই একইভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে মোহাম্মদ বিন সালমানকে আমন্ত্রণের পর মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা এবং তার মরদেহ টুকরো টুকরো করার আদেশ দিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স এবং তার সরকার এটি অস্বীকার করে। এরপর থেকে পশ্চিমা বিশ্বে তিনি তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন এবং ওই অভিযোগ ওঠার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি আর ব্রিটেনে যাননি।

হত্যাকাণ্ডের শিকার সৌদি সাংবাদিকের বাগদত্তা হ্যাটিস গেঙ্গিজ বলেছেন, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে আমন্ত্রণ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্মৃতির প্রতি একটি কলঙ্ক। এমনকি যুবরাজ লন্ডনে অবতরণ করার সময় তাকে গ্রেপ্তার করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। যদিও এমন কিছু আসলেই ঘটার ব্যাপারে সন্দেহ আছে তার।

আন্তর্জাতিক অস্ত্র ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায় এমন সংস্থা ক্যাম্পেইন এগেইনস্ট দ্য আর্মস ট্রেড অভিযোগ করেছে, তাদের ভাষায় সৌদি আরব এবং অন্যান্য উপসাগরীয় রাজতন্ত্রগুলো তাদের মানবাধিকার বিষয়ক দুর্নাম ঘোচানোর জন্য রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াকে ব্যবহার করছে।

সংস্থাটি মনে করে, আট বছর আগে ইয়েমেনে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, ব্রিটেন সেখানে যুদ্ধরত সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অস্ত্র বিক্রি করেছে।

২০১৭ সালে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হওয়ার পর থেকে সেখানে সামান্য যতটুকু রাজনৈতিক স্বাধীনতা ছিল তাও সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সরকারের সমালোচকদের সেখানে ব্যাপকহারে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে, এমনকি শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কোনো কিছু পোস্ট করার জন্যেও।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হওয়া সত্ত্বেও উপসাগরীয় অঞ্চলে সৌদি আরবের সঙ্গে ব্রিটেনের এক ধরনের গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে। ইরানের আগ্রাসী সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো সৌদি আরবকে একটি বাধা হিসেবে মনে করে।

সৌদি আরব পশ্চিমা কয়েকটি দেশ থেকে ব্যাপক পরিমাণে অস্ত্র ক্রয় করে। যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি অস্ত্র ক্রয় করে সৌদি আরব তার একটি। সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির বিরাট অংকের অস্ত্র ব্যবসা রয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি হাজার হাজার প্রবাসী শ্রমিক নিয়োগ দেয়, বার্ষিক হজ্ব যাত্রার আয়োজন করে। বিশ্বে তেলের মজুদের ১৮ শতাংশ হচ্ছে সৌদি আরবে এবং বিশ্বের সবচাইতে বড় জ্বালানি তেল রপ্তানিও করে থাকে এই দেশটি।