মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫

গৃহবধূকে হত্যা: তাবলীগ জামাত থেকে খুনি গ্রেপ্তার

মাওলা সুজন, নোয়াখালী

প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৬:১২ পিএম

গৃহবধূকে হত্যা: তাবলীগ জামাত থেকে খুনি গ্রেপ্তার

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে সড়কে পথ আটকে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে দেবরকে নরসিংদীর তাবলীগ জামাত থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৪ডিসেম্বর) বিকালে আসামিকে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা করা হয়েছে। এর আগে, সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানাধীন মৌলভীবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।  
গ্রেপ্তারকৃত সাইফুল্ল্যাহ খালেদ (২৮) উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের পৌর হাজীপুর এলাকার চিরণভূঁইয়ার নতুন বাড়ির আব্দুল কাইউম লিটনের ছেলে। নিহত শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩০) উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর হাজীপুর এলাকার নোয়াবাড়ির কুয়েত প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী। তিনি দুই ছেলের জননী ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পারিবারিকভাবে ১৬ বছর আগে পিংকির সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিয়ে হয়। খালেদ পিংকির দূর সম্পর্কের চাচাতো দেবর হয় এবং একই বাড়ির বাসিন্দা। বছর খানেক আগে পিংকির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নষ্ট হয়ে যায়। তার বড় ছেলের মাধ্যমে সেটি মেরামত করে আনতে দেয় দেবর খালেদকে। ওই সময় খালেদ মোবাইল থেকে পিংকির প্রবাসী স্বামীকে পাঠানো ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও নিজের মুঠোফোনে নিয়ে নেয়। এরপর ওই ছবি ও ভিডিও দিয়ে পিংকিকে ব্যাকমেইল  করে সাত লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। একই কায়দায় পরকীয়া ও শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর চেষ্টা চালায়। ব্যর্থ হয়ে সে আরও টাকা দাবি করে এবং শারীরিকে সম্পর্কের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু পিংকির অনড় অবস্থানের কারণে ব্যর্থ হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে। গত মঙ্গলবার ১৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর এলাকায় সড়কে একা পয়ে পিংকি ও তার শশুর রেজাউল হককে (৮০) ছুরিকাঘাত করে খালেদ। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক পিংকিকে মৃত ঘোষণা করে। বর্তমানে পিংকির শশুরও অবস্থাও আশংকাজনক।
পুলিশ আরো জানায়, ঘটনার পর পরই আসামি খালেদ ঢাকা কাকরাইল জামে মসজিদে গিয়ে তাবলিগ জামায়াতের সাথে যোগ দিয়ে করে আতœগোপন করে। পরবর্তীতে ঢাকায় ৩ দিন তাবলিগ জামায়াত সম্পন্ন করে নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার মৌলভীবাজার এলাকার নলুয়া জামে মসজিদে গিয়ে তাবলীগে জামায়াতে যোগদান করে। বেগমগঞ্জ মডেল থানার আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামির অবস্থান নির্ণয় করে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) নরসিংদী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।  
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো.আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ঘটনার পর পরই পৃুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্ঠা চালায়। কিন্তু পালিয়ে যাওয়ায় এবং মোবাইল বন্ধ থাকায় তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছেনা। সোমবার তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকালে তাকে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।